আত্মদর্শন



"আত্মদর্শন"
--আইনুদ্দীন আলী

হে নাদান,
এই পৃথিবী তোমায় যেতে হবে ছেড়ে,
তুমি ছিলে না! ছিলে মৃত জল ডোরে।
নিস্তেজ শুক্রানু আর ডিম্বানু স্থির হয়ে
তোমার অবয়ব সৃষ্টি, ফের যাবে লয়ে।
কোথা হতে কর হে, এতো অহংকার
এ গৌরব  আধিপত্যের বড় হুংকার।
জ্ঞানের বিশালতা, প্রিয়জনের মোহতা
ঢের সম্পত্তি তোমার খ্যাতি মিছে তা।

হে নাদান,
তোমায় তো নির্দিষ্ট একটা সময় দেয়া
পারবে না তার ব্যতিক্রম কিছুটা নেয়া।
সেদিন নিছক প্রভাব বা অনুনয় বিনয়
আসবে না কাজে, তার কাছে পরাজয়।
দেহের খাঁচা থেকে নির্দয় ছিনিয়ে নেবে
রুহের পাখি, এ মাটির দেহ শুন্য রবে।
কি নিদারুণ যন্ত্রণা, তৃষ্ণায় হবে কাতর
সমুদ্র জলেও নিবারণ নহে, দেহ নিতর।

হে নাদান,
চারপাশে থাকা প্রিয়জন তোমায় হারিয়ে
করবে করুণ চিৎকার রোদন জল গড়িয়ে।
সারাটা বাড়ির সবটায় হায়! তোমার শুন্য,
আলোচিত হবে মুখে মুখে তবো পাপপুণ্য। 
পাড়াপড়শি এসে, দেহখানি রাখবে মাটিতে
স্বাদের খাটে না,  রাখবে না নকশীকাঁথাতে।
ঢেকে দেবে প্রিয় মুখ, দিয়ে একটা চাদর,
এ নিয়মে দেখাবে না কেউ একটুও আদর।

হে নাদান,
গরম জলে দেবে তোমায় জনমের গোসল,
বুঝবে সবই, থাকবে না তো বলার সম্বল।
আলমারিতে রাখা কত পোশাক রঙিন
নাহ! এসব তো নয়, ধবধবে সাদা মার্গিণ।
ঘীট দেবে পায়,দেবে তোমার বুকের মাঝে,
আফসোস! মাথা সমেত বাধা রবে খাজে।
কত বাহন চড়েছো, হিসাব জানো কি?
শেষ বিদায়ের বাহন আসবে ও পালকি।

হে নাদান,
পারবে না করতে তাদের, মিনতি বারণ
যতনে তুলে দেবে তোমার আপনজন।
কোথায় যাচ্চো জানো কি হে নাদান?
নির্জন নিঝুম, ভয়ে ভরা গোরস্তান।
মাটির গর্তে, মাটিতে, মাটি চারপাশে
নামবে তোমার ভাই, যারা ভালবাসে।
ছাউনি দিয়ে মাটি দিবে তোমার উপরে
আসবে ফেলে একা রেখে ঐ কবরে।

হে নাদান,
ভবের মাঝে যা করেছে দেবেরে হিসাব
কর্মফলে পাবে শান্তি কিবা তো আযাব।
চোখের জলে কি লাভ? নেক আমল
করতে যদি পারো, হবে তো না বিফল।
মালিক তোমার রহমান, দয়ালু অতি
পাপের তরে ক্ষমা চাও, যাবে দূর্গতি।
পরিত্রাণের তরে তুমি, চলো সঠিক পথে
আর কত থাকবে নাদান, মরিচার রথে।।

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post

Featured post